শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৬ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার:বরিশাল সদর আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী আরিফিন মোল্লা নিজেকে নিয়ে গেলেন নতুন করে ইতিবাচক আলোচনায়। দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী আরেক নেতা মাহবুব উদ্দিন আহম্মেদের (বীর বিক্রম) বিশালাকায় একটি বিলবোর্ড ঝড়ে ছিড়ে পড়লে আরিফিন মোল্লা নিজ উদ্যোগে তা সংস্কার করে যথাস্থানে বসিয়ে দেন। গত বুধবার সন্ধ্যারাতের এই ঘটনা বরিশাল রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি ব্যতিক্রম চিত্র বা পদক্ষেপ বলে বেশ প্রশংসিত হচ্ছে। এর আগে কে বা কারা আরিফিন মোল্লার নামে সদর রোডে থাকা একটি বিলবোর্ড ছিড়ে ফেলে। এছাড়া আরো কিছু ঘটনার মধ্য দিয়ে বরিশাল আওয়ামী লীগের মধ্যে আগামী সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীতা নিয়ে এক ধরনের মনোস্তাত্ত্বিক লড়াই ও প্রতিহিংসার রাজনীতি প্রকাশ পায়। কোন কিছুর জবাব বা প্রতিবাদ না জানিয়ে নীরব আরিফিন মোল্লার উল্টো ব্যতিক্রমী এই ভূমিকায় তার বিরোধীদের মুখে ছাই দিলেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ১৫ আগস্ট উপলক্ষে নগরীর চৌমাথায় মাহবুব উদ্দিন আহম্মেদের (বীর বিক্রম) উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর বিশালাকায় ছবি সম্বলিত একটি বিলবোর্ড টানানো হয়েছিল। বুধবার সকালে তা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ছিড়ে পড়ে। ওই দিন সন্ধ্যারাতে ওই পথ দিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাশী আরিফিন মোল্লা তার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে যাচ্ছিলেন। তার দৃষ্টি পড়ে বিধ্বস্ত ওই বিলবোর্ডের দিকে। তিনি তাৎক্ষণিক গাড়ি থেকে নেমে নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেন বিলবোর্ডটি যথাস্থানে বসিয়ে দিতে। ওই বিলবোর্ডের অবকাঠামোগত কিছু ক্ষয়ক্ষতিও তিনি সংস্কার করেন। এসময় নিজেই দাঁড়িয়ে থেকে কাজের তদারকি করতে দেখা যায়। সেখানে থাকা নিজের বিলবোর্ড অপেক্ষা তারই ঘরোয়া প্রতিদ্বন্দ্বী মাহবুব উদ্দিন আহম্মেদের বিলবোর্ডটি আরো মজবুত করে সেটে দেন। এই ঘটনা দেখার জন্য মুহূর্তের মধ্যে সেখানে শত শত লোকের ভীড় জমে। বলা বাহুল্য যে, নবগ্রাম এলাকার বাসিন্দা আরিফিন মোল্লার নিজ গ্রামের প্রবেশদ্বার হচ্ছে এই চৌমাথা।
উল্লেখ্য, বর্তমান বরিশাল রাজনৈতিক অঙ্গনে আরিফিন মোল্লা বেশ আলোচিত নাম। বিশেষ করে নিজ দলীয় নেতৃবৃন্দ মনোনয়ন প্রত্যাশী এই যুবকের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে হঠাৎ প্রশ্ন তুলে বিতর্কের ঝড় তোলেন। যা পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ায় তোলপার পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। এ নিয়ে দলের মধ্যে দেখা দেয় বিভাজন। আরিফিন মোল্লা জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কোন পর্যায়ের নেতা না হলেও মনোনয়ন চেয়ে এলাকায় উন্নয়ন কর্মকান্ড শুরু করায় অল্প দিনেই আলোচনায় চলে আসেন। একাধিক সূত্রের দাবি, তার এই উত্থান একটি পক্ষ ভালো চোখে নিচ্ছে না। কিন্তু জেলা আওয়ামী লীগের কর্নধর মন্ত্রী আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর অত্যন্ত ¯েœহভাজন হিসেবে আরিফিন মোল্লার সাথে সখ্যতা সব মহলই অবগত। দলীয় নানা কর্মসূচীতে তিনি ও তার অনুসারীদের অংশ নিতেও দেখা যায়। হঠাৎ করে একটি পক্ষ তার মনোনয়ন প্রত্যাশার বিষয়টি অবান্তর বলে মিডিয়ায় মন্তব্য করার পাশাপাশি তাকে নানাভাবে চেপে ধরার বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ প্রকাশ পায়। ফুটে ওঠে প্রতিহিংসার রাজনীতি। তবে দলীয় পরিচয় নিয়ে বিতর্কে আরিফিন মোল্লাকে কাকতালীয় বেশিমাত্রায় আলোচনায় নিয়ে আসে। কিন্তু তিনি এর কোন প্রতিবাদ এখনো দেননি বলে জানা গেছে। বরং উন্নয়ন কর্মকান্ড অব্যাহত রাখার পাশাপাশি তিনি যে আওয়ামী লীগ ঘরানার রাজনীতির সাথে বহু পূর্ব থেকে সক্রিয়তার উদাহরণ তুলে ধরার চেষ্টা করছেন।
অনেকের ধারণা হয়েছিল, এই যুবক রাজনৈতিক কুটিলতায় চুপসে যেতে পারেন। কিন্তু বাস্তব দৃশ্য তার বিপরীত। তিনি উন্নয়ন কর্মকান্ড আরো বাড়িয়ে দিয়ে নিজ এলাকাসহ বিভিন্ন সড়ক পথ নিজস্ব অর্থায়নে সংস্কার কাজ শুরু করেন। সেখানেও মহল বিশেষের পরোক্ষভাবে অসহযোগিতা করছে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে তার পোস্টার ও বিলবোর্ড ছিড়ে ফেলা হচ্ছে বলে তিনি অনানুষ্ঠানিক অভিযোগ তোলেন। এতসব প্রতিবন্ধকতার মুখে নিজ ঘরানার প্রতিদ্বন্দ্বীর ভেঙ্গে পড়া বিলবোর্ড সংস্কার করে যথাস্থানে বসিয়ে দেওয়ার পদক্ষেপে যেমন প্রশংসিত হয়েছেন। পাশাপাশি সড়ক উন্নয়নের নতুন উদ্যোগ মানুষের নজর কেড়েছে।
এ প্রসঙ্গে আরিফিন মোল্লার মন্তব্য হচ্ছে- তিনি প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নন। তাছাড়া দলের মধ্যে নীতি ও আদর্শগত মতপার্থক্য থাকাটাই স্বাভাবিক। তাই বলে প্রতিদ্বন্দ্বী কোন নেতাকে নিয়ে ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ করা বা তার পোস্টার-ব্যানার ছিড়ে ফেলার রাজনীতিকে নোংরামি বলে মনে করেন। মনোনয়ন না পেলেও তার উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।
Leave a Reply